রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে/সব গাছ ছাড়িয়ে/উঁকি মারে আকাশে। এ কবিতার স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর কবিতার সঙ্গে স্মৃতিবিজড়িত স্থানটি হল শাহজাদপুর।
এই শাহজাদপুর ঘেঁষে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। করতোয়ার একটা শাখা যুক্ত হয়েছিল বড়াল নদীর সঙ্গে। এই শাখা নদী খোনকারের জোলা কুঠিবাড়ির সামনে দিয়েই বহমান ছিল।
কবিগুরু এই নদী দিয়ে তাঁর বোট ‘চিত্রা’ ও ‘পদ্মা’ দিয়ে যাতায়াত করতেন। সেটি এখন ভরাট। এ নদী দেখেই রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটুজল থাকে’।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এসেছেন অনেকবার। এখানে অবস্থানকালে কবিতা, প্রবন্ধ, ছোটগল্পসহ অনেক অমর রচনাবলী লিখেছেন কবি। তিনি নেই কিন্তু তার পায়ের চিহ্ন রয়ে গেছে কাচারিবাড়ি সহ শাহজাদপুরের বিভিন্ন স্থানে। সঙ্গে রয়েছে তার জীবনের নানা স্মৃতি। কাচারিবাড়িতে রক্ষিত অর্ডার বুক থেকে জানা যায়, জমিদারি দেখাশোনার কাজে কবিগুরু ১৮৯০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম শাহজাদপুর আসেন। ১৮৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনি এখানে এসেছেন।
শাহজাদপুর কাচারিবাড়ি অষ্টাদশ শতাব্দীতে ছিল নীলকরদের কুঠি। যে কারণে এখনো এটা ‘কুঠিবাড়ি’ বলে পরিচিত। পরে কবিগুরুর ঠাকুরদাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি নিলামে উঠলে মাত্র ১৩ টাকা ১০ আনায় কিনে নেন। এই এলাকা নাটোরের জমিদারির অংশ ছিল। জমিদারি কিনে নিলে প্রায় ১০ বিঘা জমিসহ এই কুঠিবাড়িটিও কবি পরিবারের হাতে আসে।
বর্তমানে কবির পরশধন্য এই বাড়িটি রক্ষনাবেক্ষণে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দায়িত্ব নিয়েছে। এই ভবন চত্বরে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে রবীন্দ্র অডিটোরিয়াম। বর্তমানে কুঠিবাড়িটির উত্তরদিকের প্রধান ফটকের সামনে হাট কর্তৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের এই কুঠিবাড়ি এখন ইতিহাস হয়ে হাতছানি দেয় সবার কাছে। ছুটে যেতে মন চায় তার পদচারণার ঔ ভূমিতে।
প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদ